কলকাতার সল্টলেকের যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে লিওনেল মেসির উপস্থিতিকে ঘিরে তৈরি হওয়া ভিড় শেষ পর্যন্ত রূপ নেয় বিশৃঙ্খলায়। অতিরিক্ত মানুষের চাপে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ঘাটতি দেখা দিলে নির্ধারিত কর্মসূচি শেষ হওয়ার আগেই মাঠ ছাড়তে হয় আর্জেন্টাইন ফুটবল তারকাকে।
প্রিয় তারকাকে এক ঝলক দেখার আশায় আসা হাজার হাজার ভক্ত হতাশ হয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে স্টেডিয়াম এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এই দুঃখজনক ঘটনার জন্য পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি প্রকাশ্যে মেসির নিকট ক্ষমা চেয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ দেয়া এক বার্তায় তিনি বলেন, সল্টলেক স্টেডিয়ামে যা ঘটেছে, তাতে তিনি গভীরভাবে মর্মাহত ও স্তম্ভিত।
এই মুখ্যমন্ত্রী লেখেন,‘সল্টলেক স্টেডিয়ামে আজ যে অব্যবস্থা দেখা গেল, তাতে আমি স্তম্ভিত, মর্মাহত। আমি স্টেডিয়ামে যাচ্ছিলাম, অজস্র ক্রীড়াপ্রেমীদের মতোই প্রিয় ফুটবলার মেসিকে দেখতে। এই দুঃখজনক ঘটনার পর আমি মেসির কাছে এবং সমস্ত ভক্তদের কাছে ক্ষমা চাইছি।’
এদিকে এই বিশৃঙ্খলার কারণ খতিয়ে দেখতে ও দায় নির্ধারণের জন্য এরই মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকার একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীম কুমার রায়ের নেতৃত্বে গঠিত এই কমিটিতে মুখ্য সচিব এবং স্বরাষ্ট্র ও পার্বত্য বিষয়ক দফতরের অতিরিক্ত মুখ্য সচিবও অন্তর্ভুক্ত থাকবেন। কমিটি ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করবে, দায়ীদের চিহ্নিত করবে এবং ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সে বিষয়ে সুস্পষ্ট সুপারিশ দেবে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, অনুষ্ঠানের সময় স্থানীয় কিছু রাজনীতিবিদের মেসিকে ঘিরে থাকার ঘটনায় দর্শকদের মধ্যে প্রথম অসন্তোষ দেখা যায়। এরপর নির্ধারিত সময়ের আগেই মেসিকে মাঠ থেকে দ্রুত সরিয়ে নেয়া হলে ভক্তদের ক্ষোভ বাঁধ ভেঙে যায়।
ভিডিওতে দেখা যায়, উত্তেজিত জনতা ব্যারিকেড ভেঙে ফেলছে এবং মাঠের ভেতরে বোতল ও চেয়ার ছুড়ছে। কিছু পুলিশ সদস্যকে ভাঙা চেয়ার দিয়ে মাথা বাঁচানোর চেষ্টা করতে দেখা যায়। একপর্যায়ে হাজার হাজার মানুষ ফেন্সিং ভেঙে মাঠে ঢুকে পড়ে। কয়েকজন দর্শক মাঠের ধারে রাখা তাঁবুতে আগুন দেয়ার চেষ্টা করেন। এছাড়া গোল পোস্টের জাল ছিঁড়ে ফেলা হয় এবং সাজঘরে যাওয়ার টানেলের ছাউনিও ভেঙে দেয়া হয়।
আরডি