কৃষিপ্রধান রাজশাহী বিভাগের সিরাজগঞ্জ জেলার চৌহালী উপজেলা সরিষা ফুলে ভরে গেছে ফসলের মাঠ। যেদিকে তাকানো যায় শুধু সবুজের ফাঁকে হলুদের সমাহার। পথিকের নজর কাড়তে ফুলের সৌন্দর্য বাড়িয়েছে মৌমাছির দল। কখনো কখনো সরিষা খেতে বসছে পোকাখাদক বুলবুলি ও শালিকের ঝাঁক। অনেকটায় প্রতিকূল আবহাওয়ার পরেও এখানে প্রায় ২৫৬০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানায় উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার মাঠে মাঠে চাষ করা হয় সব রকমারি ফসল। সরিষা চাষ কিছুটা কম হলেও ফসলের মাঠের শোভা বাড়িয়ে তুলেছে এসব সরিষা খেত। মাঠের চারিদিক যেন হলুদে হলুদে পরিপূর্ণ। এক দেখাতেই মন কাড়বে পথচারীদের। সরিষা ফুলের শোভা আরও বাড়িয়ে তুলেছে অসংখ্য মৌমাছির দল। গুণগুনিয়ে মধু আহরণে ব্যস্ত তারা। এ মৌসুমে অধিক পরিমাণ মধু উৎপাদনের জন্য মাঠে মাঠে মৌবাক্স স্থাপন করছে মধু ব্যবসায়ী ও মৌচাষিরা।
উপজেলার উল্লেখযোগ্য খাষকাউলিয়া জোতপাড়া এলাকা, কুরকী, পশ্চিম জোতপাড়া, দক্ষিণ খাষকাউলিয়া ও পশ্চিম কোদালিয়াসহ বিভিন্ন স্থানের মাঠের পাশে শতশত মৌবাক্স স্থাপন করা হয়েছে। মধুচাষে ভালো লাভের কারণে এ পেশায় আগ্রহী হয়ে উঠছেন অনেকেই। ইতোমধ্যে খাঁটি এসব মধু উৎপাদনে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন শতাধিক খেটে খাওয়া মানুষ। এখন পেশাদার মধু ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন তারা।
দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন পদ্ধতিতে মধুচাষ করে আসছে স্হানীয়রা। প্রতিবছর এ সংস্থাটি বিভিন্ন মাঠে তাদের চাষ করা মৌবক্স থেকে কয়েক টন মধু সংগ্রহ করে থাকে। পরে এসব মধু শোধনের পর সারা বছর বাজারজাত করে আসছে। সংস্থার মূলধন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বেকারের কর্মসংস্থান, মৌপালন ও মধুচাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন সকল পেশাজীবীরা।
উপজেলার দক্ষিণ জোতপাড়া গ্রামের কৃষক ময়নাল হক বলেন, সার, বীজ, কীটনাশক সরবরাহের পাশাপাশি গুরুত্বের সঙ্গে প্রায় দুই বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছি। সরিষার গাছ ভালো হয়েছে। ভাল ফুল ফুটেছে বলে ভালো ফলনও আশা করা যায়।
কোদালিয়া এলাকার বৈন্যা গ্রামের মধুচাষী শামচুল হক বলেন, চাকরির দায়িত্ব পালনের পর অবসর সময়ে মৌচাষ করে উৎপাদিত মধু হতে অনেক টাকায় আয় হয়ে থাকে। এ থেকে অর্জিত টাকায় ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার খরচ জোগায়। এটি একটি লাভজনক পেশা।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ জাহিদুল ইসলাম বলেন, এ বছর সরিষার আবাদ ভালো হয়েছে। ফলনও ভাল ফলবে বলে আশাবাদী তিনি। এছাড়াও সরিষা খেতে মৌমাছি পালন ও মধুচাষে অনেক বেকারের কর্মসংস্থান বাড়ছে।
এসআর