ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার পৌর শহর ও উপজেলার বগার বাজার চৌরাস্তা,কালির বাজার, সানকিভাঙ্গা বাজার সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে নামসর্বস্ব অসংখ্য দন্ত চিকিৎসালয়। কোনো প্রকার স্বীকৃত ডিগ্রি বা বৈধ লাইসেন্স ছাড়াই এসব চেম্বারে চিকিৎসার নামে চলছে অবাধ প্রতারণা। ফলে সাধারণ রোগীরা একদিকে যেমন আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন, অন্যদিকে অপচিকিৎসার শিকার হয়ে ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ত্রিশাল বাজারের মহিলা ডিগ্রি কলেজ রোডসহ বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে এসব তথাকথিত ডেন্টাল ক্লিনিক। আকর্ষণীয় সাইনবোর্ড ও বাহারি বিজ্ঞাপনের আড়ালে এখানে চিকিৎসা দিচ্ছে নামধারী কিছু ‘ডেন্টিস্ট’, যাদের অধিকাংশেরই নেই কোনো বিডিএস ডিগ্রি। মূলত অভিজ্ঞ কোনো চিকিৎসকের অধীনে টেকনিশিয়ান বা সহকারীর কাজ শিখে সেই অভিজ্ঞতার দোহাই দিয়ে নিজেরাই চেম্বার খুলে বসেছেন তারা।
দাঁতের সাধারণ সমস্যা নিয়ে আসা রোগীরা এসব অপেশাদারদের হাতে পড়ে দীর্ঘমেয়াদী জটিলতায় ভুগছেন। ভুক্তভোগী এক রোগী আরমান মিয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, "দাঁত তুলতে গিয়ে আমি দীর্ঘমেয়াদী ইনফেকশনের শিকার হয়েছি। এখানে কোনো জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা নেই। তারা বড় বড় কথা বলে শুধু টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে, অথচ কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।"
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, অনিবন্ধিত এসব ক্লিনিকে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি সঠিকভাবে জীবাণুমুক্ত না করায় হেপাটাইটিস-বি, সি এবং এইচআইভির মতো মরণব্যাধি রোগ ছড়ানোর তীব্র ঝুঁকি থাকে।
স্থানীয় সচেতন মহলের দাবি, স্বাস্থ্য বিভাগের নিয়মিত তদারকি না থাকায় এসব অবৈধ ক্লিনিক মালিকরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। তারা অবিলম্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করে এসব ভুয়া চিকিৎসালয় বন্ধের জোর দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এস.এম. জিয়াউল বারী জানান, "বিডিএস ডিগ্রিধারী চিকিৎসক ছাড়া অন্য কারো দাঁতের চিকিৎসা বা অস্ত্রোপচার করার কোনো আইনি অধিকার নেই। সাধারণ মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া হবে না। প্রশাসনের পক্ষ থেকে শীঘ্রই এসব অবৈধ ক্লিনিক ও ভুয়া চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান পরিচালনা করা হবে।"
এসআর