এইমাত্র
  • ভারতের জার্সি পরে খেললেন পাকিস্তানি খেলোয়াড়, সমালোচনার ঝড়
  • পঞ্চগড়ে হোমিও চিকিৎসককে জরিমানা
  • চকরিয়ায় পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু
  • টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ম্যাচের টিকিটের মূল্য প্রকাশ
  • শিবচরে সড়ক দুর্ঘটনায় অজ্ঞাত নারীর মৃত্যু
  • কুষ্টিয়ায় আওয়ামী লীগের ৪ জন গ্রেপ্তার
  • ভোলায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে কৃষক নিহত
  • বরিশালে মহাসড়কের পাশ থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার
  • মনোনয়ন সংগ্রহ করলেন ইসলামি আন্দোলনের মুফতী আবু বকর
  • মনোনয়ন সংগ্রহ করলেন ইসলামি আন্দোলনের মুফতী আবু বকর
  • আজ বৃহস্পতিবার, ৪ পৌষ, ১৪৩২ | ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫
    দেশজুড়ে

    রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ফুটবল টার্ফকে কেন্দ্র করে সংঘাতের আশঙ্কা

    এম ফেরদৌস, উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি প্রকাশ: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:১১ পিএম
    এম ফেরদৌস, উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি প্রকাশ: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:১১ পিএম

    রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ফুটবল টার্ফকে কেন্দ্র করে সংঘাতের আশঙ্কা

    এম ফেরদৌস, উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি প্রকাশ: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:১১ পিএম

    কক্সবাজারের উখিয়া শরণার্থী শিবির এলাকায় যত্রতত্র অনুমোদন বিহীন ফুটবল টার্ফ গড়ে উঠছে। প্রয়োজনীয় অনুমতি ছাড়াই রোহিঙ্গাদের অর্থায়নে এসব আধুনিক ফুটবল মাঠ (টার্ফ) অবৈধভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। এতে রোহিঙ্গা শিবির ও আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা ও প্রশাসনিক তদারকি নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

    স্থানীয়রা জানিয়েছেন, রোহিঙ্গা মাদক কারবারিদের অর্থ ব্যবহার করে এসব টার্ফ নির্মাণ ও পরিচালনার মাধ্যমে নিয়মিত গণজমায়েত ঘটিয়ে লাখ লাখ টাকার বাণিজ্য পরিচালনার পাঁয়তারা করছে একটি অসাধু চক্র।

    অনুসন্ধান ও তথ্য সূত্র বলছে, এসব টার্ফের মালিকানা ও অর্থায়নের পেছনে রোহিঙ্গা ক্যাম্পকেন্দ্রিক অবৈধ কর্মকাণ্ডের অর্থ রয়েছে। তবে পরিচালনার দায়িত্ব কৌশলে স্থানীয় কিছু ব্যক্তির হাতে রাখা হচ্ছে, যাতে বিষয়টি স্বাভাবিক ব্যাবসা হিসেবে উপস্থাপন করা যায়।

    একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোকে ঘিরে মাদক কারবারসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের তথ্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরে রয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি টার্ফের মতো বিনোদনমূলক অবকাঠামোকে ব্যবহার করে স্থানীয়দের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের মেলামেশার সুযোগ তৈরি করা হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।

    জানা গেছে, ২০১৭ সাল থেকে কয়েক দফায় রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঘটলেও এখনো প্রত্যাবাসনের কার্যকর অগ্রগতি না থাকায় একটি চক্র অবৈধ ব্যাবসা ও বসবাস স্থায়ী করার চেষ্টা করছে। এসব কাজে সহযোগিতা করতে স্থানীয় কিছু অসাধু ব্যক্তিকে অর্থের লোভ দেখিয়ে বিভিন্ন ব্যবসায় অংশীদার করা হচ্ছে।

    একইভাবে ফুটবল খেলার টার্ফগুলোও স্থানীয়দের নামে পরিচালিত হলেও বাস্তবে এর পেছনে রোহিঙ্গা মাদক কারবারিদের অর্থ রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। এতে করে একটি প্রভাবশালী বলয় তৈরির চেষ্টা চলছে বলেও মনে করছেন সচেতন মহল।

    সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, মধুরছড়া, জামতলীসহ ৪ টি এরকম ফুটবল টার্ফ দেখা গেছে। সবখানেই রোহিঙ্গারা দলবেঁধে খেলতে যায়। থাইংখালী ক্যাম্প-১২ তে দেখা গেছে, 'আকতার' নামের এক ব্যক্তি একটি টার্ফ নির্মাণ করে সেখানে নিয়মিত রোহিঙ্গাদের গণজমায়েতের আয়োজনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের মধ্যে বিভ্রান্তি ও উত্তেজনা তৈরি হচ্ছে। পরিস্থিতি এভাবে চলতে থাকলে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

    পার্শ্ববর্তী লোকজন বলছে বনের জমিন অবৈধভাবে দখল করে রোহিঙ্গাদের নিয়ে এসব আয়োজন করেছে। সিইসি বা আরআরআরসি থেকে অনুমতিও নেয়নি তারা।

    এ বিষয়ে আকতারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘কাগজে কলমে অনুমতি না দিলেও মৌখিকভাবে বলা আছে। এটি বনের নই খতিয়ানী জমি।’

    স্থানীয় জয়নাল মেম্বার বলেছেন, ‘আকতারের টার্ফটি বনের জমিতে। বাকিগুলো কিছু খতিয়ানী জমি আর বনের জমি মিক্স আছে।’

    হাতে আসা একটি কল রেকর্ডে শুনা গেছে, ক্যাম্প ১২ এর সিইসিকে ৫ লাখ টাকা ঘুস দিয়ে এসব টার্ফের মৌখিক অনুমোদন নেয়।

    ‘এ বিষয়ে অবগত না, অনুমতির বিষয়টি ওবায়দুল্লাহ মহোদয় জানতে পারবেন। যেহেতু আপনি ইনফরমেশন দিয়েছেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে’-বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (যুগ্মসচিব) মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা।

    শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (যুগ্মসচিব) আবু সালেহ মোহাম্মদ ওবায়দুল্লাহ বলেছেন, ‘লিখিত কাউকে অনুমোদন দেওয়া হয়নি, আগে এসব কিসের জমি দেখতে হবে, বনের হলে ফরেস্টারকেও অবগত করা লাগবে। স্পেসিফিক তথ্য দিন বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’

    স্থানীয়দের একাংশ মনে করছেন, খেলাধুলা বা ছোটোখাটো বিষয়কে কেন্দ্র করে সংঘাতের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। অতীতে ক্যাম্পকেন্দ্রিক সহিংস ঘটনার অভিজ্ঞতার আলোকে তারা আশঙ্কা করছেন, এসব টার্ফকে কেন্দ্র করে এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে।

    ক্যাম্প ১২ তে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বে থাকা ৮- এপিবিএন পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার জহির উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘টার্ফ করার বিষয়টি আমরা জানি না। হঠাৎ দেখি টার্ফে রোহিঙ্গারা খেলাধুলা করছে।’ সংঘাত হলে আপনারা দায় এড়াতে পারেন কি না..? এমন প্রশ্নে বলেন, ‘এখন বিষয়টা সিইসি মহোদয় কিভাবে নিচ্ছে সেটা তো জানি না। সংঘাত হলে অবশ্যয় আমাদের ফোর্স যাইতে হবে। আমাদের পক্ষ থেকে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন মহলকে অবগত করা হবে।’

    ইখা

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    Loading…