শরীয়তপুরে ধর্ষণের ঘটনায় আলোচনা সমালোচনা জন্ম নেয়ার পর ঘটনাটি আবার নতুন মোড় নিয়েছে। নানা বিতর্ক ও সমালোচনার পর অবশেষে বুধবার (১১ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে পালং মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী নারী। অভিযোগে ১০–১২ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে চারজনকে আটক করেছে।
আটককৃত ব্যক্তিরা হলেন, মাদারীপুর জেলার কালকিনি থানার বিল্লাল হাওলাদারের ছেলে মারুফ হাওলাদার (১৮), শরীয়তপুর সদরের পূর্ব কাশাভোগ এলাকার দাদন বেপারীর ছেলে নাফিজ বেপারী (২২), মৃত মোস্তফা খানের ছেলে সাইফুল খান (২২) ও পশ্চিম পরাসর্দ্দি এলাকার খোরশেদ আলমের ছেলে সিফাদ ভূইয়া (২০)।
গত মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় শরীয়তপুর বন বিভাগের ভেতরে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে প্রথমে অভিযোগ তোলেন ভুক্তভোগী নারী সাদিয়া জাহান(১৯)। তার বক্তব্য অনুযায়ী, অনার্স পরীক্ষার পর এক পরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন তারা। ঠিক সেই সময় কয়েকজন যুবক জোরপূর্বক তাদের রাস্তা থেকে তুলে বন বিভাগের কার্যালয়ে নিয়ে যায়। সেখানে তাদের ওপর মারধর করে টাকা দাবি করা হয়। পরে টাকা দিতে না পারায় তিন যুবক মিলে তাকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে জনমনে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সাধারণ মানুষ দায়ীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
তবে পরদিন সকালে ঘটনাটিতে নতুন মোড় নেয়। তদন্তে জানা যায়, ভুক্তভোগী নারী কোনো কলেজছাত্রী নন। তিনি দুই সন্তানের জননী। আরও বেরিয়ে আসে, তার সঙ্গে থাকা ব্যক্তি বন্ধুর পরিচয় দিলেও তিন বছর ধরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। এমনকি ঘটনার দিন তারা একসঙ্গে মাদারীপুরে ঘুরতে গিয়েছিলেন।
পরবর্তীতে ভুক্তভোগীর অভিযোগেও পরিবর্তন আসে। তিনি জানান, বাস্তবে একজন ব্যক্তি তাকে যৌন নির্যাতন করেছে, আর সেখানে উপস্থিত ছিল আরও কয়েকজন। প্রাথমিকভাবে তিনজনের নাম দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার সঙ্গে থাকা প্রেমিক ‘মামলাকে শক্তপোক্ত করতে’ তিনজনের নাম বলার পরামর্শ দিয়েছিল। ভুক্তভোগীর দাবি, যিনি তাকে নির্যাতন করেছেন তাকে তিনি চিনতে পেরেছেন এবং নির্যাতনের সময় তাকে মারধর করে একটি আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করা হয়।
এ বিষয় পালং মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহ আলম বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা তাৎক্ষণিকভাবে তদন্ত শুরু করেছি। ইতোমধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের বিশেষ অভিযান চলছে।’
এসএম